poddoja Things To Know Before You Buy
ফরিনা ধীরে ধীরে চোখ খুললেন। চোখের দৃষ্টি ঘোলা। কিছু মুহূর্তের ব্যবধানে বয়সের তুলনায় একটু বেশিই যেন বয়স্ক দেখাচ্ছে। ফরিনা কিছু একটা বললেন। লতিফা বুঝলো না। সে নত হয়ে ফরিনার মুখের কাছে নিজের মুখ এনে বললো,’কী কইছেন খালাম্মা?’
আমির সোজা হয়ে বসে। তার চোখ দুটি রক্তের মতো লাল হয়ে গেছে। মেঝেতে শুয়ে, দুই হাতে নিজের চুল টেনে ধরে। কিছু একটা ভাবছে সে। দেখে মনে হচ্ছে,সমুদ্রের অতলে সে হারিয়ে যাচ্ছে। পানি খেতে খেতে তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। কোনদিকে সাঁতরালে কিনারা পাওয়া যাবে ঠাওর করতে পারছে না। মজিদ খলিলকে নিয়ে সরে যান। আমির উঠে দাঁড়ায়। ঘরে পায়চারি করে। ঘন,ঘন নিঃশ্বাস ছাড়ে। ঘাড়ের রক্ত শুকিয়ে গেঞ্জির সাথে লেপ্টে আছে। আমির চেয়ারে বসে হেলান দিলো। চোখ বুজতেই ভেসে উঠে পুরনো মুহূর্ত। আকাশে লক্ষ লক্ষ তারা। তার মাঝে ছিল একটা মাত্র চাঁদ। আকাশের নিচে পদ্ম নীড়ের ছাদে আমির পদ্মজাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। মৃদু কোমল বাতাসকে স্বাক্ষী রেখে পদ্মজা বলেছিল,’পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরুষ স্বামীটি আমার, তাই প্রতিটি মেয়ের আমাকে হিংসে করা উচিত।’
‘ওদের খাওয়ার সময় হয়েছে। তুইও খেয়ে নে?’
মাহবুব মাস্টার চোখের চশমা ঠিক করে বললেন,'ভীষণ বেয়াদব তো! এতো অধৈর্য্য কেন তুমি?'
লোকটার পাশে বেশিক্ষণ না থাকতে? তোরা কেনো শুনিস না আমার কথা?’
বিছানার উপর কাঁথা মোড়ানো ফরিনার দূর্বল দেহটা শুয়ে আছে। বিদ্যুত নেই। ঘরের এক কোণে লণ্ঠন জ্বলছে। ফরিনার চোখ বোজা। লতিফা পায়ে পায়ে হেঁটে এসে নিঃশব্দে ফরিনার শিয়রে দাঁড়াল। ক্ষীণস্বরে ডাকলো,’খালাম্মা ঘুমাইছেন?’
কেন এমন জীবন দিলে আমায়! আমি কী করব? মৃত্যু দাও আমাকে।’
হেমলতা চলে যেতেই পদ্মজার চোখ থেকে টুপ করে এক ফোঁটা জল পড়ে পাতে। পদ্মজা দ্রুত হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখের জল মুছে। পদ্মজার জীবনে জন্মদাতা আছে ঠিকই। কিন্তু জন্মদাতার আদর নেই। সে জানে না তাঁর দোষটা কী?
লতিফা বললো,'না,খাইবো না। তোমরা দুইডায় যেমনে মাস্টারের সামনে পদ্মর মুখ কালা করছো। পদ্ম খাইবো কেন? হে গুসা করছে।'
ঈশ্বরের অন্তিম শ্বাস দেবারতি মুখোপাধ্যায়
ভালোবাসার জন্য এক কোমল হৃদয় প্রেমিক ... অর্ডার করুন
পদ্মজা দ্রুত কলপাড়ে গিয়ে ব্রাশ করে,মুখ ধৌত করে। হেমলতা শিক্ষকের মেয়ে। তাই তাঁর মধ্যে নিয়ম-নীতির প্রভাব বেশি। মেয়েদের শক্তপোক্ত নিয়মে রেখে বড় করছেন। পদ্মজা রান্নাঘরে ঢুকে দেখল প্লেটে খাবার more info সাজানো। সে মৃদু হেসে প্লেট নিয়ে টেবিলে গিয়ে বসল। তখন হেমলতা আসেন। পদ্ম দ্রুত ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকে। হেমলতার দেওয়া আরেকটা নিয়ম, খাওয়ার সময় মাথা ঢেকে খেতে হবে। পদ্মজা নিশ্চুপ থেকে শান্তভঙ্গিতে
পদ্মজা রেগে কিছু বলতে যাচ্ছিল,তখনই বুঝতে পারলো নুড়ি কেন নামায আদায় করতে পারবে না। সে আমুদে স্বরে বললো,' ও তাহলে আপনি এজন্যই আজ এতো চুপচাপ?'
মেয়েগুলোর চিৎকার ভেসে আসে। তাদের অত্যাচার করা হচ্ছে খুব। কিছু একটা দিয়ে পিটাচ্ছে,ফ্যাচফ্যাচ শব্দ হচ্ছে। কোন বাবা-মায়ের চোখের মণিদের এভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে!